প্রকাশিত: Tue, Jul 4, 2023 11:40 PM
আপডেট: Mon, May 12, 2025 7:43 PM

[১]জেনিনে ইসরায়েলি অভিযানের দ্বিতীয় দিনে আরো ৩ জন নিহত [২]রুখে দাঁড়িয়েছে ফিলিস্তিনিরা

ইমরুল শাহেদ: [৩] অধিকৃত পশ্চিমতীরে এক দশকের সবচেয়ে বড় এই অভিযানের দুই দিনে জেনিনে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও একজন নিহত হয়েছে রামাল্লায়। সূত্র: আল-জাজিরা

[৪] সোমবার সকালে বিমান সেনাদের সহায়তা নিয়ে প্রায় এক হাজার ইসরায়েলি সেনা জেনিনের শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালায়। প্রথম দিনে ৮ জনের প্রাণহানির পাশাপাশি ১০০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। 

[৫] এই হামলা আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থিত ফিলিস্তিনি প্রশাসনকে ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থগিত করার জন্য প্ররোচনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

[৬] এই হামলাকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে বর্ণনা করেছেন। মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে পশ্চিমতীরে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। এদিন বিভিন্ন দপ্তর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। 

[৭] ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, তারা জেনিন শরণার্থী শিবির থেকে তিন হাজার লোক অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। সেখানে মাত্র আধা কিলোমিটার এলাকায় ১৪ হাজার বাসিন্দা বাস করে। 

[৮] জাতিসংঘ মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, জনবহুল একটি এলাকায় সশস্ত্র হামলার বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

[৯] জেনিনে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম জুড়ে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ হয়েছে।

[১০] বিক্ষোভের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি তরুণদের মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। ফিলিস্তিনি তরুণরা ইসরায়েলি সাঁজোয়া যানের দিকে ঢিল ও আতশবাজি নিক্ষেপ করে। পক্ষান্তরে ইসরায়েলি সেনারা স্টান গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার-কোটেড বুলেট নিক্ষেপ করে।

[১১]  পশ্চিম তীর, রামাল্লা এবং আল-বিরহের উত্তরের প্রবেশদ্বার, সেইসঙ্গে নাবলুসের কাছে বেইতা গ্রাম, হেব্রনের কাছে বেইত উমর, আইদা শরণার্থী শিবির এবং বেথলেহেমের হুসান গ্রাম, আজাউন সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় শত শত তরুণ সমবেত হয়। কলকিলিয়ার কাছে এবং জেরিকো শহরজুড়ে সংঘর্ষ অব্যাহত আছে।

[১২] বিক্ষোভের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে একজন ফিলিস্তিনি আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। টিয়ার গ্যাসের কারণে অনেকে শ্বাসকষ্টে পড়েন। 

[১৩] অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে, সিলওয়ান, ইসাবিয়া, ওয়াদি জোজ, শুফাত শরণার্থী শিবির এবং আবু ডিসের আশপাশে সংঘর্ষ হতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

[১৪] ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার সকালে জেনিন সরকারি হাসপাতালের প্রবেশপথে কয়েক ডজন টিয়ার গ্যাসের ক্যানিস্টার চালায়। এখানে চিকিৎসকদের দল, ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা পরিবারগুলো এবং গণমাধ্যমকর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন।

[১৫] জেনিনের উপর ইসরায়েলের হামলার কারণ হলো সেখান থেকে সৃষ্টি হওয়া প্রতিরোধকে পুরোপুরি চূর্ণ করে দেওয়া। কিন্তু সেখানে তরুণ ফিলিস্তিনিরা ক্রমবর্ধমানভাবেই অস্ত্র হাতে তুলে নিতে শুরু করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের কট্টর-ডান সরকার অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা অব্যাহত রাখতে পারে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব